ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশ হওয়া একটা গবেষণা পত্রে দাবি করা হয়েছে যে যারা অ্যালকোহল খাই তাদের ধীরে ধীরে কগনিটিভ পাওয়ার বা জ্ঞানের যে দক্ষতা আছে সেটা কমতে শুরু করে। এর ফলে কি হয় শুধু স্মৃতিশক্তি না বুদ্ধি এবং মনোযোগ কমে যায়। এখানেই শেষ নয় কেউ যদি নিয়মিত মদ্যপান করে তাহলে তার শরীরের কোলেস্টরলের মাত্রা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে তার রক্তচাপও ওঠানামা করে । যার ফলে যেকোনো সময় সেই ব্যক্তি স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে।যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে এখন সবার প্রশ্ন হল যারা এতদিন পর্যন্ত মদ্যপান করে এসেছে তাদের মস্তিষ্কের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। তো তারা এখন কি করবেন? সে ক্ষেত্রে আমি আপনাদেরকে বলবো আজকে আমার এই পোস্ট এ যেয়ে খাবার গুলোর কথা আমি উল্লেখ করব সেই খাবারগুলো যদি তারা নিয়মিত খাই তাহলে তাদের কগনিটিভ পাওয়ার আবার বাড়তে শুরু করবে। আর যদি কগনিটিভ পাওয়ার বাড়ে তাহলে তার স্মৃতিশক্তি বাড়বে। তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই কোন খাবারগুলো খেলে ব্রেন পাওয়ার বাড়তে পারে।
ডিম স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
ডিম এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী কোলেস্টরেল এবং কোলীন। যেটা নিউরোনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে ব্রেনের পাওয়ার বা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এমনকি একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে কেউ যদি প্রতিদিন ডিম খায় তাহলে তার শরীরে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যেটা ব্রেনের যেন কোনভাবে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখে। ফলে যারা নিয়মিত ডিম খায় তাদের ব্রেন ডিজিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে
অলিভ অয়েল স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
আমাদের এশিয়া মহাদেশে সাধারণত অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করা হয় না। কিন্তু যদি অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করা হতো তাহলে সবাই অনেক বেশি উপকার পেত । অলিভ অয়েল এ পলিফেনল নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে যেটা ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে বা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অনেকটাই কাজে দেয়। অনেকগুলো কেস স্টাডি চলাকালীন সময়ে বিজ্ঞানের লক্ষ্য করেছেন যে নার্ভের কর্ম ক্ষমতা অলিভ অয়েল নামক উপাদান বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যায়। যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে
আরো জানুনঃ (Amazon) অ্যামাজন জঙ্গল কে সারা পৃথিবী যে কারণে ভয় পায়।
ব্রোকলি স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
ব্রোকলি তে রয়েছে সালফারাফেন নামক এক ধরনের উপাদান। এই সবজি খেলে মানুষের শরীরে থাকা ক্ষতিকর উপাদানগুলো বেরিয়ে যেতে শুরু করে। যার কারণে ব্রেনের কোন ধরনের ক্ষতি হয় না এবং ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই কমে যায়। এজন্য আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বেশি বেশি ব্রোকলি খাওয়া উচিত।
জাম স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে চাইলে আমাদের বেশি বেশি করে জাম খেতে হবে । কারণ জামে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেটা আমাদের ব্রেন যেন না শুকিয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখেন। জাম শুধু আমাদের ব্রেন সেল না শুকিয়ে যাওয়ার দিকে লক্ষ্য করে না সেইসঙ্গে ব্রেনের ভেতরে প্রদাহ কমানোর মধ্য দিয়ে ব্রেনকে নানারকম ডিজিস থেকে দূরে রাখতে ভূমিকা পালন করে। যেসব মানুষের অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মত মস্তিষ্কের অসুখ আছে তাদের উচিত প্রতিদিন জাম খাএয়া। তাহলে তারা অনেক বেশি উপকার পাবে।
পালং শাক স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
আমাদের বাঙ্গালীদের সব শাকের প্রতি একটি দুর্বলতা কাজ করে । আর দুর্বলতা কেনই বা থাকবে না । কারণ শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। তেমনি পালংশাকের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট যেগুলো ব্রেনের কার্যক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি কাজে দেয়। আপনি নিয়মিত যদি পালংশাক খান তাহলে আপনার ব্রেন পাওয়ার বা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
আরো জানুনঃ ঘি এর কয়েকটি উপকারিতা
হলুদ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
না না একদমই ভুল শোনেননি ঠিকই শুনেছেন। ব্রেন পাওয়ার বা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এই প্রাকৃতিক উপাদান টি অনেক ভালো কাজে আসে। হলুদের রয়েছে বেশ কয়েকটি কার্যকরী উপাদান। এই উপাদান গুলো একদিকে যেমন আমাদের মস্তিষ্কের ভিতর জ্বালাপোড়া কম করে, তেমনি অন্যদিকে আমাদের বুদ্ধি বিকাশে সাহায্য করে থাকে। সম্প্রতি প্রায় তিন হাজার বছরের আগের একটি আয়ুর্বেদিক পুথির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে খুব ভালোভাবে উল্লেখ করা আছে যে ব্রেন পাওয়ার বা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে হলে কিভাবে কাজ করে।
আখরোট স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
আখরোট আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অনেক বেশী কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কারণ আখরোটের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন, কপার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি আসিড, ম্যাগনেসিয়াম এগুলো নানা রকম ভাবে আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আর সেই সাথে সাথে আমাদের দেহে যে উপকারী ব্যাকটেরিয়া গুলো আছে সেগুলো সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে কি হয় আমাদের মস্তিষ্কের সবদিক থেকেই অনেক উপকার হয়।
আরো জানুনঃ দুপুরের খাবারে এই খাবারগুলো খাওয়া খুব জরুরি
মাছ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
যে মাছগুলোতে তেল বেশি থাকে সেই মাছগুলোতে ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড বেশি থাকে। আর এই ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুব ভালো কাজ করে। আর ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড যুক্ত মাছ গুলো খেলে মানুষের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড টি শুধুমাত্র আমাদের ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ায় না ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের মস্তিষ্কে যে অংশটি শক্তির আধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে
শতমূলী স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
শতমূলী একটি প্রাকৃতিক উপাদান আর এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রার ফাইবার এবং অন্যান্য এমন কিছু উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের শরীরের মস্তিষ্কে উপকার হয় এমন ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে দেয়। শতমূলীতে রয়েছে ফলেট এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান। এই দুটি উপাদান আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে খাবার গুলা খেলে আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে
স্মৃতিশক্তি নষ্ট করতে পারে যে ৫টি খাবার
শরীর সুস্থ রাখার জন্য আমাদের সুস্থ থাকাটা খুব বেশী জরুরী। আমাদের মস্তিষ্ককে সক্রিয় এবং ধারালো রাখার জন্য পুষ্টিকর উপাদান খুব বেশি জরুরি। বাজে কিছু খাদ্য অভ্যাস এর জন্য আমাদের মস্তিষ্কের মারাত্মক রকম ক্ষতি হতে পারে। এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । আমরা যদি আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলে এবং কিছু কিছু অস্বাস্থ্যকর খাদ্য রয়েছে সেগুলো এড়িয়ে চলি তাহলে আমরা আমাদের স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর ঝুঁকি থেকে বাঁচতে পারব। সাথে সাথে আমাদের খাবারের তালিকাতে এমন কিছু খাবার যুক্ত করতে হবে যেগুলো আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। কারণ স্মৃতিশক্তি যদি কমে যায় তাহলে আমাদের অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি নয়। এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে সেগুলো হলোঃ
সাদা চাল স্মৃতিশক্তি কমায়
সাদা চাল আমাদের মানসিক ফাংশনে অনেক বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে । কারণ হলো সাদা চালে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। আর এই সাদা চাল খেলে আমাদের মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আপনি যদি চান তাহলে আপনি সাদা চাল কে এড়িয়ে গম জাতীয় খাদ্য খেতে পারেন। যেগুলো খেতেও সুস্বাদু এবং অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর হয়। কোন কোন খাবার স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে
আরো জানুনঃ রসুন খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা ।
অ্যালকোহল স্মৃতিশক্তি কমায়
আপনি যদি অ্যালকোহল জাতীয় কিছু পান করেন তাহলে আপনার মস্তিষ্কে দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। আপনি যদি সামান্য পরিমাণ ও অ্যালকোহল পান করেন তাহলেও আপনার মস্তিষ্কের কোষগুলো কিন্তু দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আর এই আলকোহল পানের ফলে আপনার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই থাকে। কোন কোন খাবার স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে। কোন কোন খাবার স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে
সয়া সস স্মৃতিশক্তি কমায়
আপনি যেকোন ভাবেই সয়া সস খান না কেন যদি সেটা টফু ও হয় তাহলেও সেটা উপকারের থেকে আপনার বেশি ক্ষতি করবে। কারণ সয়া সস থাকে উচ্চমাত্রায় লবণ এবং সোডিয়াম । এই দুটো উপাদানই আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এটা থেকে আপনার হাইপার টেনশন হতে পারে। যার কারণে আমাদের মস্তিষ্কে রক্তচাপ কমে গিয়ে আমাদের স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার বা স্মৃতিভ্রম হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে । কোন কোন খাবার স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে। কোন কোন খাবার স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে
কমলার জুস স্মৃতিশক্তি কমায়
কমলার জুস অতিরিক্ত রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। নানা কারণে কমলার জুস একদম স্বাস্থ্যকর নয়। রক্তের সুগারের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যায় সেটা আমাদের স্মৃতিভ্রম হওয়ার অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করে। এর ফলে কি হবে আপনি যদি অতিরিক্ত কমলার জুস পান করেন তাহলে আপনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সক্ষমতা হারাতে পারেন। যার কারণে কমলার জুস অতিরিক্ত পান করা উচিত নয় । কমলার জুস অতিরিক্ত পান করার ফলে আপনার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
টুনা মাছ স্মৃতিশক্তি কমায়
প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন টুনা মাছের থাকে। যেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তবে টুনা মাছ যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায় তাহলে এটি আমাদের স্মৃতি শক্তি কমিয়ে দিতে পারে। এটি যদি পরিমাণ মত খাওয়া যায় তাহলে সেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার হতে পারে। আমরা সপ্তাহের মাত্র দুই বারের মতো টুনা মাছ খেতে পারব । টুনা মাছ যদি আমরা অতিরিক্ত খায় তাহলে আমাদের মস্তিষ্ক তার কর্ম ক্ষমতা হারাবে । কেননা টুনা মাছে উচ্চমাত্রায় পারদ থাকে । আর পারদ আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয় । আমরা যদি টুনা মাছের বদলে স্যামন জাতীয় মাছ খায় তাহলে অনেক বেশি উপকার পাবো। আর আমাদের স্মৃতিশক্তি নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না । কোন কোন খাবার স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে
আরো জানুনঃ চিয়া সীড কে কেন সুপার ফুড বলা হয়।
আমাদের শেষকথা
আপনারা আজকে আমারে আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পারবেন যে কোন কোন খাবার খেলে আমাদের থেকে শক্তি বাড়বে এবং কোন কোন খাবার খেলে আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যাবে। যে যে খাবারগুলো খেলে আমাদের শরীরে শক্তি বাড়বে সেগুলো আমাদের নিত্যদিনের খাবারের সাথে সংযুক্ত করা উচিত। এবং যে যে খাবারগুলো খেলে আমাদের স্মৃতি শক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে সে খাবার গুলো আমাদের খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে আমরা একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন পাব ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন