আমরা জানি যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন একটি অনেক বড় মহাকাশযান, যা পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে।
এটা পৃথিবী থেকে প্রায় 240 মাইল উপরে ভেসে বেড়াচ্ছে।
এই মহাকাশযানটিকে মহাকাশচারীদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর এই মহাকাশযানে ছয়জন স্পেস ক্রু ছাড়াও এই মহাকাশে অতিথি অভ্যর্থনার ও
ভাল ব্যবস্থা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান সহ মোট15 টি দেশের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল হল এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন। আন্তর্জাতিক সমঝোতার অংশ হিসেবে এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনটাকে মানব সভ্যতার একটা অনন্য অর্জন বলে গণ্না করা হয়। এ্টা 1998 সালের 20 নভেম্বর লঞ্চ করা হয়। তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই
এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন সম্পর্কে নাসার কিছু চমকপ্রদ তথ্য।
খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন চলছে
এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনটি প্রতিদিন পৃথিবীকে পাক্কা ১৬ বার করে প্রদক্ষিণ করছে। গাণিতিকভাবে বলতে গেলে বলতে হয় পৃথিবীতে ছোঁড়া একটি বুলেটের10 গুণ বেগে প্রতি ঘন্টায় 28,000 কিলোমিটার বেগে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে এই মহাকাশযানটি।
খাওয়া দাওয়া, টয়লেট,
আমরা যখনি মহাকাশযান এর কথা ভাবি তখনি এই দুইটি প্রশ্ন সবার মাথায় ঘুরপাক খায় আর তা হল নভোচারীগণ খাওয়া দাওয়া করেন কীভাবে, আর টয়লেটের ব্যবস্থাই বা কী?
এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে দুইটা টয়লেট রয়েছে। যা নভোচারীরা তাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। এমনকি নভোচারীদের প্রশাব ফিল্টারিং করে পান করার যোগ্য পানিতে পরিণত করা হয়।
সামান্য পরিমাণ যে কোন তরল পদার্থের ছিটেফোঁটাও যদি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থাকে তাহলে বিশাল দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। সেখানে নভোচারীরা তরল পানীয় ব্যাগ থেকে স্ট্র এর মাধ্যমে পান করেন। নভোচারীরা খাবার খাই ট্রে থেকে যেগুলো ম্যাগনেট এর মাধ্যমে মহাকাশযানের সাথে আটকানো থাকে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র পৃথিবী থেকে দেখা যায়
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন হচ্ছে রাতের আকাশে পৃথিবী থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ উজ্জ্বল বস্তু, যা আপনি সম্পূর্ণ খালি চোখে দেখতে পাবেন । আপনি আকাশে অতি দ্রুততার সাথে ছুটে যাওয়া বিমান সদৃশ আলোই
দেখতে পাবেন আর সেটাই হল ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন। সকালবেলা এবং সন্ধ্যাবেলা এটি সবচেয়ে ভাল দৃশ্যমান হয়।
শারীরিক পরিবর্তন এখানে বিদ্যমান
এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে মহাকাশচারিদের বিভিন্ন ছোট থেকে বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেমন তাদের পায়ের পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চার মত কোমল হয়ে যায়। তাছারা গ্র্যাভিটির অভাবে শরীরের হাড়গুলা যেন ক্ষয় হয়ে না যায়, সেজন্য তাদেরকে বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়ামও করতে হয়ে থাকে।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন এ ইন্টারনেট ব্যবস্থা
এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন এর সকল নভচারিদের কাছেই রয়েছে ল্যাপটপ। আর ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে ইন্টারনেটের সু ব্যবস্থা রয়েছে। আর তাই তাঁরা ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হয়ে তাদের পরিবার ওথবা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। আর ইন্টারনেট থাকার কারনে আপনার আমার মত লাইভ টিভি কিংবা সিনেমা উপভোগ করার সু্যোগ তো আছেই। এই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে 600 মেগাবাইট/সেকেন্ড গতির ইন্টারনেট রয়েছে যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়।
অত্যন্ত বিশাল এটা
মানুষের তৈরি সর্ববৃহৎ বস্তু হল এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন। এটা 357 ফুট লম্বা। আর এই বৃহৎ মহাকাশযানটা এর 460 টন ভর ওজন নিয়ে মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
একটি আদর্শ গবেষণাগার
এই মহাকাশযানে নভোচারীর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেত্রবিশেষে এক্সপার্ট বিজ্ঞানী এবং গবেষক রয়েছেন ।
আর এর জন্যই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে সারাক্ষণ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকে।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সময়ের পরিবর্তন
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে নভচারীগণ পৃথিবীতে অপেক্ষাকৃত কম বয়স নিয়ে ফিরে আসেন। মহাকাশযানটির অতি দ্রুত বেগের কারণে সেখানে পৃথিবীর চেয়ে সময় অনেক ধীরে কাটে সেখানে। তবে এই সময় টা যে বিশাল একটি সংখ্যা, তেমন কিছু না। স্পেস স্টেশনে 6 মাস কাটানোর পর নভোচারীগণ পৃথিবীতে থাকা মানুষ এর চেয়ে মাত্র ০.০০৫ সেকেন্ড ছোট হন।
অনেক সহজ কাজও দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে |
যেসব কাজ পৃথিবীতে অনেক সহজ, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সেসব কাজ রীতিমত দুঃসাধ্য বলা চলে। সামান্য চুল কাটার মত সাধারন কাজ সাড়তেও সেখানে বিশাল ভোগান্তি পোহাতে হয় নভোচারীদের। ভ্যাকুয়াম এ সংযুক্ত থাকা ক্লিপার এর সাহায্যে চুল কেটে থাকেন নভোচারীগণ। আর এই চুল কাটাতে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় নভোচারীদের। আর তার কারন সামান্য একটি চুলও মহাকাশযানের বিভিন্ন ফিল্টার কিংবা যন্ত্রকে নিমিষেই মধ্যেই অচল করে দিতে পারে।
চাঁদ সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য যা আপনার জানা প্রয়োজন
কেউ চাইলে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন ঘুরে দেখতে পারে
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন মানুষকে এক হয়ে ভাবতে সাহায্য করে আসছে। এমনকি আপনি যদি চান তাহলে এর অংশ হতে পারেন্। যে কেউ গুগল স্ট্রিট ভিউ ব্যবহার করে মহাকাশযানটিকে পৃথিবী থেকে দেখতে পারেন |
মহাকাশ স্টেশন , মহাকাশ স্টেশনে যেতে কত সময় লাগে, মির কোন দেশের মহাকাশ স্টেশন, মহাকাশ স্টেশন কয়টি, মির মহাকাশ স্টেশন তৈরি করে কোন দেশ, বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, স্পেস স্টেশন কাকে বলে, স্পেস স্টেশন কী?, মহাকাশ রহস্য, মহাকাশের ছবি, মহাকাশ সম্পর্কে তথ্য,, মহাকাশ বিজ্ঞান, মহাকাশ গবেষণা,, মহাকাশ কি, মহাকাশ কাকে বলে, মহাকাশ অনুসন্ধান, মহাকাশ রহস্য,
খুব ভালো তথ্য, আমি এটার থেকে আছি
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন